Unknown Light - 1 in Bengali Love Stories by MOU DUTTA books and stories PDF | অচেনা আলো - 1

Featured Books
  • અસવાર - ભાગ 3

    ભાગ ૩: પીંજરામાં પૂરો સિંહસમય: મે, ૨૦૦૦ (અકસ્માતના એક વર્ષ પ...

  • NICE TO MEET YOU - 6

    NICE TO MEET YOU                                 પ્રકરણ - 6 ...

  • ગદરો

    અંતરની ઓથથી...​ગામડું એટલે માત્ર ધૂળિયા રસ્તા, લીલાં ખેતર કે...

  • અલખની ડાયરીનું રહસ્ય - ભાગ 16

    અલખની ડાયરીનું રહસ્ય-રાકેશ ઠક્કરપ્રકરણ ૧૬          માયાવતીના...

  • લાગણીનો સેતુ - 5

    રાત્રે ઘરે આવીને, તે ફરી તેના મૌન ફ્લેટમાં એકલો હતો. જૂની યા...

Categories
Share

অচেনা আলো - 1

পর্ব – ১ : প্রথম দেখা

কলেজে নতুন সেমিস্টারের প্রথম দিন। চারপাশে অচেনা মুখ, নতুন বই, নতুন ক্লাসরুম, নতুন ভয় আর কৌতূহল। ইশানি খুব শান্ত মেয়ে। ছোটবেলা থেকে বই পড়া আর কবিতা লেখা তার নেশা। অন্যরা যখন হইহই করে কথা বলে, সে তখন এক কোণে বসে নিজের ডায়েরিতে কিছু না কিছু লিখে ফেলে।

সেদিনও তেমনই করছিল। কলেজ লাইব্রেরির শেষ বেঞ্চে বসে বইয়ের পাতায় চোখ রাখলেও তার মন ছিল অন্য কোথাও। সে ভেবেছিল—“এখানে কি কাউকে পাওয়া যাবে, যে আমাকে সত্যিই বুঝবে?”

ঠিক তখনই দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকল মিশা। হালকা গোলাপি রঙের সালোয়ার কামিজ, চুলগুলো খোলা, চোখে যেন এক অদ্ভুত দুষ্টুমি লুকানো। হাঁটতেই চারপাশের সবাই তাকিয়ে রইল, কিন্তু মিশার চোখ গেল সোজা শেষ বেঞ্চে বসে থাকা ইশানির দিকে।

এক মুহূর্তের জন্য তাদের চোখে চোখ পড়ল।
ইশানির বুক ধক করে উঠল। যেন অচেনা আলোর ঝলক এসে তার ভেতর আলোড়ন তুলল।

মিশা সোজা গিয়ে বসে পড়ল ইশানির পাশে।
— “হাই, আমি মিশা। তুমি?”

ইশানি হালকা কাঁপা গলায় বলল,
— “আমি… ইশানি।”

— “তুমি সবসময় বই নিয়ে থাকো নাকি? এত সিরিয়াস দেখাচ্ছে তোমাকে।”

ইশানি হেসে ফেলল। সে সাধারণত অপরিচিত কারও সামনে এত সহজে হাসত না। কিন্তু মিশার দুষ্টু চোখে এমন কিছু ছিল যা তাকে ভেতর থেকে স্বস্তি দিচ্ছিল।

কয়েক মিনিটের মধ্যে কথোপকথন জমে উঠল। মিশা চঞ্চল, মিশুক, সবার সাথে মিশে যায়। আর ইশানি শান্ত, ধীর, কিন্তু গভীর। এই অদ্ভুত বৈপরীত্য তাদের প্রথম আলাপে এক অদ্ভুত মিল এনে দিল।

মিশা বইয়ের তাক থেকে একটা কবিতার বই টেনে নিয়ে বলল,
— “এগুলো তুমি পড়ো?”

ইশানি মাথা নাড়ল।
— “হ্যাঁ… কবিতা আমার কাছে নিঃশ্বাসের মতো।”

মিশা মুচকি হেসে বইটা উল্টাতে লাগল।
— “আমি খুব একটা পড়ি না, কিন্তু কবিতার লাইনে মাঝে মাঝে নিজের মতো করে হারিয়ে যাই। আজ থেকে তুমি আমাকে পড়াবে, কেমন?”

ইশানি আবারও হাসল। বুকের ভেতরে হালকা কাঁপুনি হচ্ছিল। “সে কেন এমন করে কথা বলছে? কেন আমার সাথে এত সহজে মিশে যাচ্ছে?”—ভেবে উঠতে পারল না।


---

দিন গড়াতে থাকল

দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ মিশা আর ইশানির মধ্যে দূরত্ব কমতে লাগল। তারা একসাথে লাঞ্চ করত, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ক্যান্টিনে বসত, আর সবচেয়ে বেশি সময় কাটাত লাইব্রেরিতে।

ইশানি নিজের ডায়েরি লুকিয়ে রাখত, কিন্তু মিশা একদিন সেটা টেনে নিল।
— “তুমি কবিতা লেখো? আমায় এক লাইনও শোনাওনি?”

ইশানি লজ্জা পেয়ে বলল,
— “ওগুলো ব্যক্তিগত।”

মিশা ঠোঁট ফুলিয়ে বলল,
— “আমায় না শুনালে কারে শুনাবে?”

সেদিন প্রথমবার ইশানি নিজের লেখা কয়েকটা লাইন পড়ে শোনাল। মিশা মন দিয়ে শুনছিল। তার চোখে যেন অন্যরকম ঝলক ছিল। কথাগুলো বুকের ভেতর গিয়ে ধাক্কা মারছিল।

শেষে মিশা ফিসফিস করে বলল,
— “তুমি জানো, তোমার লেখা শুনে মনে হলো কেউ যেন আমার ভেতরের অন্ধকার ঘরে আলো জ্বেলে দিল।”

ইশানি কিছু বলল না। শুধু বুকের ভেতর অদ্ভুত শিহরণ হলো।


---

ভিন্ন এক টান

দিন যত এগোল, মিশা আর ইশানির সম্পর্ক বদলাতে লাগল। সেটা বন্ধুত্বের চেয়ে আলাদা।

ইশানি হঠাৎ বুঝতে পারল, সে শুধু মিশার সঙ্গে সময় কাটাতে চায়।

মিশার হাসি দেখলেই তার মন ভালো হয়ে যায়।

মিশার ফোন এলে বুক ধক করে ওঠে।


কিন্তু সে ভয় পায়।
এই অনুভূতির নাম কি?
এটা কি শুধু বন্ধুত্ব, নাকি আরও কিছু?

মিশাও বুঝতে পারছিল, ইশানির মধ্যে কিছু আছে যা তাকে অন্যদের মতো মনে হয় না। ক্লাসে যতই মেয়েরা হাসাহাসি করুক, সে টেনে নিয়ে আসে ইশানিকে। লাইব্রেরির টেবিল ভরে রাখে ইশানির জন্য চকোলেট দিয়ে। কখনো হঠাৎ বলে বসে,
— “তুমি জানো, তোমাকে ছাড়া আমার দিন অসম্পূর্ণ লাগে।”

এই কথাগুলো ইশানির বুক কাঁপিয়ে দেয়।


---

এক অদ্ভুত মুহূর্ত

একদিন বিকেলে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। কলেজ ছুটি হয়ে গেছে, সবাই দৌড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। ইশানি ছাতা আনেনি। দাঁড়িয়ে ছিল গেটের কাছে।

হঠাৎ মিশা এসে ছাতা মেলে ধরল।
— “চলো, একসাথে যাই।”

ছাতার নিচে দু’জনের গা ঘেঁষাঘেঁষি। বৃষ্টির শব্দ, ঠান্ডা হাওয়া, আর বুকের ভেতরে অস্থিরতা।
ইশানি হঠাৎ অনুভব করল, মিশার হাত ছুঁয়ে গেল তার আঙুলে।

কিছুক্ষণের জন্য দু’জনেই থেমে গেল। চোখে চোখ পড়ল।
বুকের ভেতরে যেন অচেনা ঢেউ বয়ে গেল।

কেউ কিছু বলল না, শুধু চুপচাপ হাঁটতে থাকল। কিন্তু সেই মুহূর্তটা ইশানির জীবনে এক মোড় এনে দিল।


---
(চলবে…)